রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০১১

বিষলতিকার স্পর্শে গাঢ়োনীল হাহাকার


তার অনবদ্য শরীর জুড়ে আমার চুপচাপ স্পর্শের বসবাস। গুছিয়ে রেখেছি ফিরে যাওয়ার ঝোলা। কাঁধে ঝুলিয়ে নিয়েই প্রস্থান। তার শেষ চুমুতে ঠোঁট সিক্ত করে চলে যাওয়াও হয়তো সময়ের। কিন্তু কোথাও আবদ্ধ সামাজিক মন। শরীরের চেয়ে ঘন ও পার্থিব সময় আরো ঘন হয়ে ঘিরে আসে। চোখ জুড়ে ভাসিয়ে দেয় সহস্র দৃশ্য। আমি তার ঠোঁটের পাশে জেগে থাকা কাশবন। আড়ালে আখের খেত, বাঁশবন আর একটা দীঘল পথ কোন এক তালপুকুরের পাশে পড়ে থাকে। সে তখন ঘুমের ওষুধে নিষিক্ত শরীর। খুব কাছে জড়ো হওয়া রোদ। বাতাসে মাখা সুগন্ধী পেয়ে ঘুমশরীরে জেগে ওঠে সূক্ষ্মতীক্ষ্মলোম। সোনালি শরীর জুড়ে কাশবন স্পর্শে স্পর্শে খুন। তার কালো চুলের পাশে নদী। কতবার সে নদীতে ডুবে মরি!
একটা শহর জুড়ে বৃষ্টি নেমে আসে তার চলে যাওয়ার পথে চোখ ফিরাইনি বলে। কারো নথে ঝুলে থাকা স্বপ্ন স্পর্শপুলকে খুন হতে থাকে। শহরের পাশে নদী রুগ্ন আর গ্রামের পাশে বেঁচে থাকা বাতাস কারো স্তনে বিষলতিকার স্পর্শে গাঢ়োনীল হাহাকার। বৃষ্টিতে চাঁদ ধুয়ে যায়, বৃষ্টিতে জেগে ওঠে চর, সিক্ত চরাচর।
মধুবনে বুনে দিচ্ছি ধুপ, রোদচশমার আড়ালে ধারালো চোখ। প্রতিটি বাঁকেই গভীর দৃশ্য। একটা নীল সাইকেল আর পথের মাটিতে সন্ধি। ক্রমশ: নেমে এলে সন্ধ্যা কোন এক অগভীর জলাশয়ে ফেলে আসা পথটুকুর স্মৃতি জিইয়ে রাখি। বাড়ি ফিরে এসে দেখি মায়ের উনুনে শাদা ভাতের ফেনা। বাবার হাতের ঠোঙ্গায় শুকনো সন্দেশ। বাবা গভীর কন্ঠে কাছে ডেকে হাতে তুলে দিয়ে বলেন- 'খাও'। আমার চোখ পড়ে থাকে মধুবনে, সেখানে বুনে এসেছি ঝাউগাছ। রোদচশমা সহ ভুলে ফেলে এসেছি চোখ। বাবার কাছে উবু হয়ে বসি। মা পাশে এসে বসে হাত রাখেন শরীরে। বলেন, ভাত খা। আমি আর বাবা ভাতে আর জলে পাশপাশি থাকি। বাবা বলেন, ওপাশে বারান্দায় ঝুলে পড়েছে তোমার শৈশব, তুমি ঘুমাও। মা আঁচলে মুছে দিতে থাকেন ক্লান্তি।
তাঁদের বলতে সাহস করিনি, আমি আত্মহত্যা করে ঘরে ফিরেছি।

২টি মন্তব্য: