সোমবার, ৩০ মে, ২০১১

দৃশ্যের ভেতর ডুবে থেকে

চাঁদটা খসে পড়ার আগেই আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে। ঝিঁঝিঁদের আর্তনাদে অন্ধকার পথ ভূতে পাওয়া শস্যখেত আর পেত্নীদের শ্বেত শাড়ির লম্বাটে মুখোশের আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসছে শৈশবের প্রাচীণ গন্ধ। দূরে জ্বলে উঠছে কেরোসিন শিখার ছোট্ট ছোট্ট বিন্দু।

কোথাও একটা শূন্যতা উড়াউড়ি করছে, আমি একটা খুন করেছি, তার রক্ত লেগে আছে ডান হাতে।

দীর্ঘ টানেও সিগারেট থেকে ধুয়া আসে না অথচ লাল হয়ে জ্বলে জ্বলে পুড়ছে, উড়ছে ছাই। প্রচণ্ড কাঁপছে হাত....

আমি আজ শরবনে পথ হারিয়ে ফেলেছি; আমি পথিক পথ আবিষ্কার করতে জানি না। 

রবিবার, ২৯ মে, ২০১১

রেড অক্সাইড এলিট

নিঃশ্বাসের কাছাকাছি ঘ্রাণ নিয়ে ফিরি, লেহনে মসৃণ করি খাঁজের পাথর। থির জলে ঢেউ তোলে পানকৌড়ি চোখ। নির্মান ও ভাঙ্গন পরস্পর সহজাত অলৌকিক মিথস্ক্রিয়ায় কাক ও কুকুর। রেড অক্সাইড এলিটে রসস্নাতঘোর। একপায়ে শালিক হাঁটে ভোরের দিকে। নদীও নাব্যতা খোঁজে- প্রচণ্ড গতির এতোসব দৃশ্য নিয়ে মস্তিষ্কের কোষে একটি চোখ গেঁথে রাখি বৃষ্টির ফলায়।

বুধবার, ২৫ মে, ২০১১

মাঝরাতের ডাকপিয়ন


বুকের কাছাকাছি গলার ভেতর কি যেন আটকে আছে। আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। কি হয়েছে আমার! কি হয়েছে আমার!
আমার ঘরের কোন কালেই কোন জানালা ছিলো না। নাকি ছিলো! মনে করতে পারি না। আমার ঘরে এখন জানালা আছে কিনা আমি জানি না। আমি অন্ধ হয়ে গেছি। অন্ধ হওয়ার আগের স্মৃতি ভুলে গেছি, হিরন্ময়।
কে আমাকে ছিন্ন করে দিলো রাতের কাছ থেকে, কি করে ঝরে পড়লো চোখের পাতা থেকে ঘুম?
বহুদিন আমি একটা পথ হয়ে শুয়েছিলাম, আমি একটা ট্রেনের হুইসেল হয়ে বেজেছিলাম। মাঝরাতে সারা শহর আমি ছাড়া একা। মৃত জোনাকের স্মৃতির আকাশে মেঘ থাকে না। আর কোথাও বৃষ্টি হয় না, আজ আর কোথাও বৃষ্টি হয় না। কেবল আমারই বৃষ্টি থাকে সারাক্ষণ।
ছোট শহরটার রেলস্টেশনের কোণে সাপুড়ে সাপের খেলা দেখায়। অদূরে কৃষ্ণ নাগ সাথে সবুজ নাগিনী। নাগিনীর বাঁকে বাঁকে চাঁদের নহর। সাপুড়ের হাতে বর্ণালি দাড়াশ। কৃষ্ণ নাগের চোখে বিষের স্ফুরণ। নাগিনীর ঠোঁট কাঁপে, আমার চোখে গেঁথে রাখে চোখের চুম্বন। দাড়াশের শরীরে স্পর্শ রেখে আমি নাগিনীর দিকে যাই। বেগানা পুরুষ আমি নাগিনীর ঠোঁটে রাখি মরণ চুম্বন। 
প্রাচীন একটা সুর গান হয়ে বাজে, সে এখন ঘুমায়। তার ভাঁজ হয়ে থাকা শরীর দিনের ক্লান্তিতে চুপ। আমি রাত জেগে জেগে তার স্বপ্ন হয়ে ভাসি। আমার পুরাতন কাঁথাটা তার নাম নিয়ে জড়াই নিজের শরীরে। সে এখন আমার শরীরের ঘ্রাণে স্বপ্নে মজে আছে। তার ঘুম ভেঙে ভুলে যাবে আমাকে। আমি প্রচণ্ড পুরুষ তবুও কান্নায় ভেঙে পড়ি। 

মঙ্গলবার, ২৪ মে, ২০১১

পদ্মপুরাণ


পাতাবাহার দেয়ালের পাশে সবুজ জল,
ছায়া আর স্মৃতির কালো দীঘি;
নিমজ্জিত শরীরের ঘ্রাণে উষ্ণতাবন্দী
বাষ্প জড়িয়ে থাকে হাওয়ায়।
কোথাও কোলাহল স্বর থেকে বিচ্ছিন্ন গতিশীল-
মাটি আর উদ্ভিদের অশ্লীলতা
ধারণ করে বেড়ে ওঠা জলজ ভ্রুণ,
আধপোড়া কাঠের কব্জায়
সেঁটে থাকা লোহার পেরেক
স্মৃতি ও বিস্মৃতি ধরে রাখে;
নিবিষ্ট পাপের কাছে বশীবত:
পিঠের তিলে কৃষ্ণের ধুন
জবা রঙ ঘ্রাণে উদ্বেলিত চুল;
আরো গহীনে ছটফটে অন্ধকার
ক্রমশ: নিকটতর হচ্ছে।

সীমানায় দাঁড়িয়ে সুগঠিত অন্ধকার;
টুকরো টুকরো রাতের ক্রমাগত গহীন যাত্রা
আরো গাঢ়ো হয়ে ফুটে ওঠার জন্য
গহীন অনুভবে বিনিদ্র প্রচেষ্টায় হয়ে ওঠা রাতের ঘ্রাণ।
কে জানে পেলব অন্ধকারকে শোষণ করতে,
কতবার বেজে ওঠে ইন্দ্রিয়ের ধ্বনি
,
কতটি কাঁপনে ছিন্ন হয় উল্লাস
,
বিকৃতির ভেতর মজ্জাগত সুখ
?
গোপনের ভেতর প্রকাশের আনন্দ
ধারণ করেই ফেলে দিতে হয় বিচ্ছিন্নতা।
প্রতিবার আয়োজন করে বসিয়ে দেই দাঁত
লালন করি কোমল মাংশে গোপন করাত
;

এই প্রথম অন্ধকার থেকে আলোর বিচ্ছুরণ দেখি
দৃশ্যের বাইরের দৃশ্যগুলোও দৃষ্টিগ্রাহ্য হলে একে একে পুড়ে যায় হারানো শহর
কেবলই ছায়ার ভেতর খুঁজে পাওয়া ঘটনার কঙ্কাল
যতন করে পুষে রেখো স্মৃতির আলনা
জেনো ঘুনপোকা কাঠ ভালোবাসে

প্রাচীন নগরীর প্রাচীন প্রাচীরের ক্ষতে
লাল পরিচ্ছদে আবৃত কিশোরীর মোলায়েম হাত
শিখে নিচ্ছে পুরাতন ইতিহাসের ঘ্রাণ
;
রোদঘরে জমে থাকা জলের বসনে ঘাম
**************************
এই শহরে আমার কেউ নেই
পাথরের গায়ে হেলান দেয়া অবিমিশ্র অন্ধকার
পাশাপাশি শুয়ে থাকা নৈঃশব্দ্য
কাছের মানুষের দীর্ঘশ্বাসে
ভেঙ্গে পড়া সাধনার সুর:
কোথাও আজ আগুন জ্বলে যাবে।
শহরটি আমাদের ছিল বহুদিন।

যদি এবার পথ হয়ে এসো আমাদের ভেতর গুপ্ত স্বপ্নের বীজে হাহাকার রোদ
যদি এই আলোয় ভেসে যেতে থাকে জমাট আকাশ বিবর্ণ ক্ষত আর মৃত্যুপুষ্পিকা
তবে পুনঃবার প্রেম হবে
এই পথ আরো দীর্ঘ হবে
ধূলোয় লুটানো যত ঘাম
তৃষ্ণাও আকাল ও অন্ধকারে ম্লান
কিছুটা নরোম উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে রোজ
পথও পথিকের জন্য কাতর;
এখনো নগর থেকে ভেসে আসে প্রার্থনার ডাক, সিনেমার পোস্টারে কমুদ প্রাশান
এলো কেশে নাগরিক উত্থান, কবি কখনো পথ, কখনো পথিক, একটা নগর হবে নষ্টপ্রাচীন
তবে একটা নগর হোক নাগরিক সন্ধ্যায়

বাঁশপাতায় মুদ্রিত দুপুরের রোদ
হল্লার আকাশে মেঘমেদুর অবয়ব
ক্ষণেই বিবর্তন;
একটা গান সুর হারায় রোজ
একটা ফুল চির ব্যাকুল
যে সন্ধ্যায় অন্ধকার আলোর সাথে পৃথক
দু'চারটে পোড়া পাতায় ছাই আর পোড়া ঘ্রাণ
সে সন্ধ্যায়ও বাঁশপাতায় আলো ফেলে পোড়ামুখী চাঁদ।
কেউ খুন, কেউ আলো
ভুল পথে পথ হারালো

পরিপূর্ণ পাথর গলে যাচ্ছে
পাথরের গায়ে লেগে থাকা স্পর্শধাতু;
কোন গোপন নক্ষত্র চিত্রিত করে গেছে স্বর।
পাথর রূপান্তরিত ইথারে বিচ্ছিন্ন গতিশীল-
খণ্ড হোক অখণ্ড সময়;
ধারণ করা হোক সমুদয় সুর
এবার বেজে ওঠো প্রিয় সেতার
রাগে রাগে মুদ্রিত কর
পাথরের গায়ে লুপ্ত হরফ।
জাদুকরের ঝোলায় বিনীত আগুন
পোড়া অঙ্গারে লাল রঙে রঞ্জিত ধূপ।
পূণ্যবান সিদ্ধিপুরুষ
আজ রাত মহামান্বিত করে
চূর্ণ করবে পাথর মুখোশ।

তার ভেতর এক অপূর্ণ রোষ
ঘুরে ঘুরে শূন্য হয়ে ওঠে
পুরাতন মরুজ পথ আর কাঁকড়ের
সংস্পর্শে জমে থাকা ধূলো
পরিচ্ছদের বাহারে ঝলক আলো
আর পরিচিত শহরের হাওয়ায়
উড়ে যাওয়া পাখির পালক
তাকে নিমগ্ন করে-
এবার দ্বিতীয় উসবে গ্রামে ফেরা হবে
লাল মাঠের তরুণেরা
ঠিকঠাক বেছে নেবে প্রিয়তম পথ
একচিলতে রোদে শুকোতে দেবে
ভিজে যাওয়া মেঘের পরশ;
তাকে পাশে রেখে
বাঁশরীর রাতে সুরে সুরে স্নানে হবে চন্দ্রদহন।
তারা এবার ভুলে যাবে দহনকাহন
তাদের চোখে চূর্ণ হবে বিষাদের রঙ
ক্রমশ: রূপান্তর হবে ছায়া
তাদের সামনে পড়ে থাকবে শুধু এতোটুকু উঠোন!

পুতুলটা মৃত; অথচ সবুজ হয়ে শুষে নিচ্ছে হরিতের ঘ্রাণ
টুপটাপ কুয়াশার বৃষ্টিতে নিমগ্ন ভোর- ধরানো আগুনের শিখায় ঘূর্ণীতোলা ছাই
পুতুলটা শিখে গেছে মৃত্যু আর জীবন একাই;
একটি গাছের একটি পাতা ঝরে পড়ায় নাদ
বয়সের ভাঁজে লুকিয়ে থাকা শৈশব দৃশ্য উড়ায় আধপোড়া হলুদ পাতায় মুদ্রিত মথ ইতিহাস
পুতুলটা রক্তাক্ত - রক্তহীন শাদা

১০
এখানে সমাদৃত সুর প্রথমে উত্তাল
তারপর অনুসৃত মজ্জার আঁধার-
পরস্পর পরস্পরের দিকে গতিশীল চোখ
চোখের গহীনে রাতজাগা নিশির অসুখ।
সহিষ্ণু পথে বাঁশির ফাড়ল জুড়ে কান্না
সুর বিদীর্ণ মস্তিষ্কে বোধের অনুরণন
এক এক বিন্দু আলো রূপান্তরিত পাপ
আর একটা ময়ূরী পেখমে বিকীর্ণ অভিশাপ।

১১
০০০০০
এখন প্রথাগত পাকুরে
মুষরে পড়ে হাতের আঙুল
দূরে রও অলক নিষাদ
ভোর হও প্রণয়ের ঘোর
০০০০
চোখ বুজলেই সব থেমে যায়
প্রথমে দোদুল্যমান
অতঃপর অতীতের দিকে যাওয়া-
করোটিতে সাজিয়ে রাখা অতীত দেখি
ইচ্ছে হলেই নতুন করে অতীত বানাই-
০০০
দামেস্কের উদ্যানে শরাবের গ্লাস
ঠোঁটে লাগিয়ে রাখি শীতল ঘ্রাণ
ঘোর চোখে ভাঁজে ভাঁজে বিষাদের সুখ
চিবুকের নিকট শুঁকি পদ্মপুরাণ
০০
ওখানটায় সবুজে লুকিয়ে রাখো
মদ আর ঔষধি লতায় হরিতন বিষ
বিষে নীল ঠোঁটে কামড় দিয়ে রাখি দাঁতের চিহ্ন

ইচ্ছে করে খুন করি একটা---
চুপিচুপি
চুপি চুপি
খুব নিপুন ভাবে

১২
কোথাও সে ঠোঁটের গোপনে চুপচাপ কান্না
একটা আঁধার পরস্পরের স্পর্শ থেকে দূর
পায়ের কাছে জমা হয়ে থাকা পোষা অসুখ
নিঃশ্বাসে ছড়িয়ে দেই ঘ্রাণের আধখোয়া রোদ
শাদা পাথর আঁকড়ে ধরে হিরন্ময় লাল
একবার অনুমিত হত্যার দমকা বাতাস
ঝড়ের গুপ্তবনে মুরালি ভিষণ
তারা চুপচাপ লেবুবন
কপালের চুল জানে হাওয়ার দিক
আঁচলে বনের মানচিত্র আঁকা
তার বুকের কাছে নত লেবুফুলঘ্রাণ
আর চোখের নিদ্রায় হরি
 উল্লাস।

১৩
এই চোখ কোন এক র্নিবর্ষ অন্ধকারে ডুব দিয়েছিলো নদী
বেলির শাদায় জড়ানো মথ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বসন খুলে
তার পুজোর সময় কেউ উলু ধ্বনি দেয়নি, বাজেনি শঙ্খ
শাদা ধূতিতে আলতার রঙ ব্যাকুল হয়ে ডুবে ডুবে বৈচিত্র।
সুপরিমিত বাঁকে আকণ্ঠ নেশায় চুম্বন দৃশ্যগুলোকে অস্পষ্ট করে তুলে
একে একে গহনঘ্রাণে জড়িয়ে যায় জিহ্বার ধার পূর্ণতারপাপে
ধীরে বসে চাষ করি কনকলতা, সাপের মতো প্যাঁচিয়ে প্যাঁচিয়ে
চুষে নেই মধু, তাকে হত্যার আগে তার রক্ত বিষে সিনান করি।

১৪
দুইটা চোখ আড়াল থেকে আলো; দূরের দৃশ্য থেকে বিপরীত শূন্যতার সবুজ চাষ। কয়েকটি মুহূর্ত পোষে রেখে রোদ কাতর ও বিনীত স্পর্শে অশ্লীল। তাদের চোখ কারুকার্যময়, তাদের ঠোঁট জ্যামিতিক বক্রতায় ক্রুদ্ধ। তাদের এই যাত্রা ভালো, তাদের এই কলহ কবিতার জন্য; ভালো লাগে।

১৫
একটি ক্ষুদেচিঠির প্রতীক্ষায় রাত্রি গভীর
ঝিঁঝিঁদের গাঢ়ো স্বরে মেঘময় স্থির আকাশ
সবুজ আলো জ্বেলে নিজেদের অস্তিত্ত্ব
পাশাপাশি রেখে সুগঠিত শরীর খুঁজি
চিঠি আসে নাই
আজ রাত কোন ক্ষয় নেই? প্রেতরা ফিরে গেছে?
আজ রাত তবে ভয়হীন
কোলবালিশে নরম পা দেবে আছে
আজ রাতে তবে বৃষ্টি হবে না
মেঘেরা থির ঘিরে আছে চাঁদ
কারো ঠোঁটের পাশে গাঢ়ো জ্যোস্না ফেলে
চুরি করা যাবে না গভীর নিঃশ্বাস!

১৬
আঙুলগুলো ভাঁজ করে রেখেছি
নিস্তরঙ্গ সত্ত্বায় এগুলো একদিন জেগে উঠবে
আমি তার ভোরবেলার কান্নায় নিমজ্জিত থেকে সকাল হয়েছি
কারো চোখে শিশিরের টুপটাপ পতন
অন্ধবালিকার শ্বেতমনিতে প্রতিফলিত আলোর সবটুকু মন্থন-
স্মৃতিদের মৃত্যু অনিবার্য
আমি তার পাপের উলানে দু'মুখো সাপ-মদ পান করি।

১৭
হ্যাঁ, আমি স্বীকার করেছি। রুদ্র আর মেঘের আড়াআড়ি কোন পথে পৌঁছে যাব গন্তব্যে। চোখের রেটিনায় প্রতিফলিত সকল দৃশ্য সংরক্ষিত। স্পর্শঘ্রাণেশ্রবণে সে আর পাপ পাশাপাশি রাত জাগে। পাথরে খোদাইকৃত কোন চিত্র মুছে দেয়া যাবে, কিন্তু সেটা হারাবে না কখনো। তরঙ্গাকারে তা বিবর্ধিত ক্রমশঃ।
আর আমি এও মনেকরি, সকল সীমানা ছিন্ন করা হোক। বিপরীত রক্তের চাষ চিরকাল চিরকাল আর নয়। তাকে হত্যার আয়োজনে একটা বাদ্য বাজানো উচিত। বাদ্য শোক ও হর্ষ উভয়ই ধারণ করে।

১৮
আহত ডানার নীল ফড়িংটি সারা সন্ধ্যা আমার জানালা জুড়ে উড়াউড়ি করে
আমি তার গান শুনে ঘুমিয়ে পড়ি
স্বপ্নে সে ও আমি সমুদ্রস্নানে লাল জলে খেলি
কল্পনার শ্যাওলায় মুড়ালির ঘুন
অথচ তার শরীরে কোন এলাচের ঘ্রাণ নাই

রবিবার, ২২ মে, ২০১১

ইচ্ছে হয় বৃষ্টির কবিতা লিখি

ইচ্ছে ছিলো একটা বৃষ্টির কবিতা লিখি
প্রতিদিন বৃষ্টির প্রার্থনায় ছিলাম
বৃষ্টিও ভিজিয়ে দিয়ে গেছে স্মৃতি ও বিস্মৃতি সকল

কিন্তু খরায় পুড়ে খাক কলমের কালি
আঙুলগুলোও কিবোর্ডে আটকে আছে অক্ষমতায়
মস্তিষ্কের চিন্তাগুলোও ক্ষয়ে গেছে জীর্ণতায়
একটা অমসৃণ পাথরে চূর্ণ করোটির ভেতর গলিত মগজে বিষ

বৃষ্টিও বোধ হয় চেয়েছিল লেখা হোক একটি কবিতা
তাই বার বার ধুয়ে গেছে জ্বরের শরীর


বড়ো ইচ্ছে হয় কারো চোখে বৃষ্টির কবিতা লিখি

পরিবেশ পরিচিতি সমাজ

চোখের সামনে অরণ্য উজার হয়ে সবগুলো জানোয়ার চলে আসে
সকল আড়াল মুছে প্রকাশ্য সঙ্গমে বিচূর্ণ করে তোলে চারপাশ
দৃষ্টিতে গেঁথে দেয় অনিচ্ছার দৃশ্য, চোখগুলো ক্ষতবিক্ষত হয়ে ওঠে
রক্তাক্ত চোখ আর মস্তিষ্কে গলে গলে পড়ে বিচ্ছিন্ন নিউরোন

কতগুলো মানুষ আকৃতির দানব লম্বা লম্বা দাঁতে ঝুলিয়ে রাখে হলুদ অসুখ
তরল জিহ্বায় নেচে চলে অসংখ্য কীট, পুঁজ আর দূষিত রক্তে ভেজা মুখের চারপাশ

অর্নগল বমনে ভিজিয়ে দিচ্ছে আমার শরীর
উফ্ কি অসহ্য!

কোথাও একটা মানুষ নাই!

বৃহস্পতিবার, ১৯ মে, ২০১১

একটা রাত ও জোনাকমৃত্যু

নিজেকে ছড়িয়ে দিচ্ছি সুগন্ধীর মতো চারদিকে বাতাসে বাতাসে। যে অসুখ দু'চোখ জুড়ে কম্পনে কম্পনে মৃত্যুর মতো ছড়ায়। তাকে ধারণ করেই শূন্য। সারাদিনের জ্বর নিয়ে সন্ধ্যায় তার চোখে নেমে স্নান সেরে সন্ধ্যাবাতি জ্বালি। তারপর রাতের কাছে খুলে দেখাই বুকের অসুখ।


দেখি কতোটা মমতা দিয়ে সারাতে জানো! বিনোদিনীরাত, সারাও অসুখ।

বুধবার, ১৮ মে, ২০১১

মুরালিচোখেক্ষত

চোখ থেকে মুছে দিচ্ছি সকল দৃশ্য তবুও বার বার নিজেকে নিজেই দেখি, নিজের সাথে কথা বলি, নিজের ভেতর থেকে দ্বিতীয় জলেশ্বরকে সরিয়ে নিতে পারি না। চোখ গলে গলে দৃশ্য খেয়ে উজাড়। আঙুলগুলো গলে মিশে যাচ্ছে মুরালির ক্ষতে। মুরালির কণ্ঠ ছিঁড়ে বেরিয়ে আসে হংসধ্বনি। সে আমাকে দেখে না, নত হয়ে চোখে ডুবে কাঁদে। গান শেষে আমি তার চোখ থেকে কাজল তুলে নেব। 

অনুস্বর : ১


প্রচ্ছন্ন বোর্হেসের ঘরে আমরা তিনজন আর রমজান। মেঘলা আকাশ। আসার পথে দু'এক ফোঁটা বৃষ্টি আমরা আমাদের শরীরে মেখে নিয়েছিলাম। প্রথমে জলফোঁটাগুলোকে স্পর্শ করে করে আমরা নিজেদের পরিশুদ্ধ করে নেই। তারপর গেলাসে লবণ ঢেলে পান করি স্ফটিকাকার তরল। ইথারে চিঠি লিখি- 'এসো'। সে আসলে আমরা পাঁচজনে পূর্ণ হই। একটা কাগজে সে ছবি এঁকে বলে 'পৃথক'। আমরা সবকিছুকে জড়িয়ে পড়তে দেখি। তারপর আমি তার বিছানায় এলিয়ে থাকি অনেকক্ষণ। তাদের একজনের কেউ এসে একজনকে ডেকে নিয়ে যায় তরঙ্গে তরঙ্গে। সে নরোম হয়ে ভেঙ্গে পড়ে। আমি আউটসাইডার, চোখ রাখি  কখনো কুকুরের চোখে। তারপর আমরা আমাদের আঙুলগুলোকে সিগারেট ভেবে ঠোঁটে চেপে টেনে টেনে ধুঁয়া উড়াই। আমাদের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে যায় ওপাশের বারান্দায় ঝুলে থাকা তরুণী পা। কিছুটা সময় আমরা বিভ্রান্ত থাকি। তারপর চুপচাপ ফিরে আসি।

বহুদিন পর তার সাথে দেখা হওয়ার আগে আমরা দু'জনে আইসক্রিম খাই। তারপর আমরা যখন আমাদের নদীটির দিকে হাঁটছিলাম। তখন তার সাথে দেখা হয়। সে একটা আলখেল্লার ভেতর লুকিয়ে হেঁটে হেঁটে ফিরছিলো।

আমরা তার নাম দেব চোখের পাতা। তারপর আমরা নদীটির কাছে যাবো। তারা এবং আমি পৃথক থাকবো। আর আমার কেউ থাকবে না। আমি নিঃসঙ্গতা অনুভব করে তাকে ফোন দেয়ার কথা ভাববো, তাকে চিঠি লেখার কথা ভাববো। কিন্তু চুপচাপ হেলান দিয়ে একা একা বসে থাকবো।  আকাশে একটা চাঁদ থাকতে পারে গোল।

অনেকদিন পর হঠাৎ তার হাত দুটি সংকোচিত হয়ে আসে বুকের কাছে। আমার পিঠে হেলান দিয়ে দাঁড়ায় অগুছালো চুল। সে আমার কেউ নয়, কেউ নয়। তবু কি ভেবে একা একা কেঁপে কেঁপে ফিরলাম ঘরে।

কাঁটা

পুড়ে গেছে রাত্রির নখে লেগে থাকা দাগে প্রাচীণ পুরাণ, উড়ে গেছে বাতাসে চিহ্ন। পাখির ঠোঁটে লেগা থাকা চুম্বনের রঙ ছুড়ে দিচ্ছে বিদ্যুতে বিদ্যুতে।  ফুরিয়ে যাওয়া ব্রহ্মনহরে একটা ঢেউ আসবে বলে বসে আছে বৃদ্ধ হরিহর পঁচাত্তর বছর। সে মাছেদের মরণ লিখে ঢেউয়ের আঘাত সয়ে সয়ে।

সোমবার, ১৬ মে, ২০১১

বিভ্রান্তের দৃশ্যগুলো


প্রার্থনার সময় থেকে নিরুদ্দেশ অন্ধকার জমাট হয়ে এলে তার ঘুম ছুটে যায়, তার আঙুলগুলো আঙুলের চারপাশে ঘুরে স্থির কিন্তু আবেশে তৃষ্ণার্ত। একটা কণ্ঠে আকণ্ঠ ডুবে থেকে চৌচির করে নেয় নিজের শরীর, সে নিজেই ধারণ করেছে জলের অভিযোজন। একটা ট্রেনের জানালায় দৃশ্যবন্দী চোখ তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়। দ্রুতগামী দৃশ্যের ভেতর আটকে থাকে আবাবিল পাখি। সে তার রক্তে পুজোর আয়োজন করে। আর একটা সবুজঘ্রাণে মস্তিষ্ক ভারী করে তোলে। তারপরের দৃশ্য আমাদের দৃষ্টিগত হয় না।



একটা নগর রাতে জড়িয়ে নিচ্ছে বৃষ্টি। ল্যাম্পপোস্ট পাখি হয়ে উড়ে আর পাখিটা স্থির বসে থাকে ল্যাম্পপোস্টে। বাতাস ঢেলে দিয়ে যায় ইকারুসের পাখার ঘূর্ণি আর নাদ। শহরটা ঘুমিয়ে পড়ার আগেই জেগে ওঠে বাঁশিওয়ালা। এটা হ্যামিলন নয়। বাঁশি বাজবে না তবুও বৃষ্টির জলে মানুষেরা ইঁদুরের মতো গুটিসুটি মেরে হাঁটে। বৃষ্টি গায়ে মেখে মেখে ল্যাম্পপোস্টটাকে পাখি হতে দেখে। তাদের শরীর থেকে  ধুয়ে যাচ্ছে দিনের সূর্যপোড়া ঘ্রাণ। 



সে ভাঁজ হয়ে বসে আঙুলে জড়ায় রাত
জাদুর ঝোলা থেকে অদৃশ্য সুতো টেনে টেনে
নামিয়ে আনে জোকার জোনাক আর স্মৃতির ভায়োলিন
তার একটা আঙুল স্পর্শ করে ঠোঁট


তারপর 
জোসনাধোয়াজানালায় এলিয়ে দিয়ে শরীর 
মার্কজের মগজ খুঁড়ে হাসে



চোখের কোণে জন্মান্তরের দাগ, শ্বেতপদ্মফুল
চুলের গোড়ায় ঢেলে নিচ্ছে জবার আঙুল।



আমি কি সে সকল পথ অস্বীকার করে এখানে দাঁড়াইনি
তবু কেন চূর্ণ পাথর আমার রক্তের স্বাদে নোনা

রবিবার, ১৫ মে, ২০১১

ভেসে যায় সুগন্ধী বাতাসে মৃত্যুগ্রহী প্রাণ


পাথরে চূর্ণ করে দিচ্ছি হাতের আঙুল। খসে পড়ছে উভচর মন। তার গোলাপশরীর আজ রঙহীন! কাঁপছে, ভয়ঙ্কর কাঁপছে। আর কণ্ঠজুড়ে আদুরে রোদ, রোদের মাঝে গুপ্ত ধাতব ফলায় চিকচিকে ধার। স্পর্শে স্পর্শে আনত চোখে গোল হয়ে নামি, ধীরে ধীরে সযতনে আল্পনা আঁকি দু'চোখের কাজল পাতায়।

একটা অন্ধকারে পথ হয়ে মিশে গেছি। বেজে উঠছে শঙ্খধ্বনি। আলোর পাশাপাশি বুনে যাচ্ছি রাতের শস্য। ফনাতোলা রোদে পুড়ে যাচ্ছে শহর ও শরীর। একটা সুগন্ধ আলোয় মিশে একাকার। একটা অন্ধকার লকলকে জিহ্বা তোলে আঁধার। মটরের খোলশ পোড়া ধোঁয়ায় চূর্ণ শালধূপের রঙ। ভেঙে পড়ছে, ভেঙে পড়ছে নীরব নয়ন।
কারে তুমি পুজা দেবে রোদবিনোদিনী? শরীরের গহীন থেকে তোলে আনছি উম। বিনির্মানের কাঠামোয় পুনরুদ্ধার তারপর পুনরায় যুদ্ধ। তোমার দেবতারা সমকামী। তাদের চোখ জুড়ে ছায়াবাড়িঘর। প্রার্থনার গানে কম্পিত স্বর আর উচ্চাঙ্গ সুর। আমার মুখ দেখো, ভেতরে নদী নেই, প্রচণ্ড পাহাড়। যুদ্ধজয়ের পর তোমার ঠোঁটের রেখায় রেখে দেবো গোপন প্রজাপতি। তাকে তুমি হত্যা করো, ফুল।
তার বুকের কাছে জমা থাকা কিছু নৈঃশব্দ্যের গল্প কে লেখে দেয়? কার চোখের রেটিনায় উল্টো প্রতিবিম্বে ছায়া হয়ে ভাসে! প্রচণ্ডগতিতে একটা চাকা পিস্ট করে যাক মস্তিষ্ক আমার। গলিত মগজ হাতে নিয়ে খুটে খুটে দেখবো কোথায় রেখেছি স্মৃতিগুলো তার। দাও, একটা সিগারেট ধরাই।

ভেসে যাক সুগন্ধী বাতাস, ভেসে যাক মৃত্যুগ্রহী প্রাণ।

শনিবার, ১৪ মে, ২০১১

অণুরণনে ছিন্ন হচ্ছে

ভেতরে লুকিয়ে রাখছি অনন্ত পথ। যারা চলে গেছে তাদের আর ঠিকানা খোঁজা হবে না। যারা ঘুম শহরে একা একা জাগে তারা পথ চেনে না। একদিন সবার নামেই চিঠি দেয়া হবে, জানানো হবে উৎসবের বারতা। তারা কি ছিন্ন করে নিয়ে যাবে বাতাসের রঙ? তারা কি ছুঁড়ে দেবে দমকল রোদ?

বিকালে নদী আর আমরা তিনজন পথ হয়ে হাঁটি। আমাদের কাছাকাছি বাতাসে সুগন্ধী উড়ে। কারো চিঠি আমাকে উদাস করে। চুপচাপ চুপচাপ তার চোখে স্বপ্ন বপন করি। যদি ফসল হয়! যদি এ বেলা বৃষ্টিতে ভিজে যায় মাটি! তবে একটা গাছ হবে জলেশ্বর তোমার নামে।

মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০১১

বিষচুম্বন অথবা আত্মহনন


মুহাম্মদকেই তারা দায়ী করল এবং সম্মিলিত চোখে উঠোনের গর্তের দিকে তাকিয়ে থাকলো; মাটির ঘ্রাণ হয়তো তাদের আচ্ছন্ন করে। তারা মাটিকে অবলোকন করে। বস্তুত তারা নয় জন নয়; দুই জন স্নান ঘরে।


একজন কামিয়ে নিলো চুল; মাথা, বগল আর ঢেকে রাখা ফুল। তারা চুম্বনে সিক্ত করলো ঠোঁট এবং আলিঙ্গনে বিনিময় করে শরীরের উম।


পাথরের গায়ে লেখা নিজের নামটা স্পর্শ করলো সে, ফিরে উঠোনের গর্তের কাছ থেকে – অন্যজন ছবির এ্যালবামে বুলিয়ে গেল চোখ- একজন ড্রয়ারে খুঁজে-ফিরে অতীত সময়- তারা তিন জন একঘরে চুপ।


একজন দাঁড়িতে ঘষে চলে আতর লোবান; একজন চুপ করে গান শোনে-একজন ঘুম ঘুম খেলে চোখ বুজে।
আর তিনি মলা মাছের চচ্চড়ি রাঁধেন।


দুইজন স্নানঘরে জল নিয়ে খেলে; দু’জনে চারটি পৃথিবী নিয়ে ঝগড়া করে- চুষে চুষে বৃথা খোঁজে লোনামধুবিষ।


তারা নয় জন একসাথে আহার সারে, তারা নয়জন এক সাথে প্রার্থনা করে। তারা নয়জন গোল হয়ে উঠোনে দাঁড়ায়।
স্নানঘরের দু’জন শুভ্রবসনে আচ্ছাদিত। তারা পরস্পর থেকে পৃথক এমনকি দৃষ্টিও একত্রিত হয় না কখনো।
দাঁড়িওয়ালা ব্যক্তির লাল শার্ট যেন রক্তের গাঢ় রং।
সংগীত প্রেমিক নীল গেঞ্জি পড়ে আছে।
ঘুম খেলোয়াড় শাদা ফতুয়ায় ঢেকে রেখেছে গা।
পাথরস্পর্শকারীর রীমলেস চশমার পাওয়ার বেশি।
অ্যালবামের ছবি থেকে তুলে আনা স্মৃতি নিয়ে খেলছিল যে, সে বিষণ্ণতা ঢেকে রাখে কালো কামিজে।
ড্রয়ার খুঁড়ে তোলে আনা অতীতের লাল চুড়ি দুটি হাত ভরিয়ে তোলছে যার, সে ঠোটের কোণে ঝুলিয়ে রাখছে স্বর।
আর তিনি জামদানী শাড়িটায় মুড়িয়ে নিয়েছেন নিজেকে।


তারপর তারা হাঁটলেন- নয় জন।
তারা জানতেন ৩ টায় ট্রেন আসে-
তারা বিশ্বাস করলেন ৩ টায় চূর্ণ হবে পবিত্র সময়।।

১২ জুলাই, ২০১০

সোমবার, ৯ মে, ২০১১

দৃশ্যগুলো নীল

সারাটা দিন সারাটা দিন শূন্যতা ধারণ করি। আমি কি ডুবে যাচ্ছি? কোথায় নীল ফুলের ঘ্রাণ? একটা বৈশাখী বাতাস এলোমেলো করে দিচ্ছে। আঙুলগুলোও শিখে নিচ্ছে ক্ষয়। ক্ষয়ে যাওয়া আঙুলে চিঠি লিখি। কিন্তু পোস্ট করা হয় না। ডাকঘর চিনি না। এই শহরে কোন ডাকঘর নেই। যন্ত্রণা! কোথায় যে রেখেছি খাম? খুঁজে পাচ্ছি না। একটা পাখি কোথায় যেন সুর তুলছে, বোঝা যাচ্ছে না। অস্পষ্ট স্বরে কেউ গান গায়। আমি একটা গান পাচ্ছি না, জানো আমার একটা গান শুনতে ইচ্ছে করে। 

রবিবার, ৮ মে, ২০১১

তার প্রাণ চুষে নিচ্ছি

আমি তার প্রাণ চুষে নিচ্ছি। ফসফরাসে বারুদ ঘষে এলোপাথারি অন্ধকার চক্রাকারে ঘুরে ম্লান। আমার ঠোঁটে লেগে আছে লাল।

একবার শুরু করা যাত্রা
একবার মৃত্যুময়তার ভেতর আবদ্ধ
তারপর চূর্ণ চূর্ণ কাঁচ
অসংখ্য আলোর প্রতিফলন
সারি সারি মৃতদের পাশে বসে কান্না

আমি তার প্রাণ চুষে নিচ্ছি। আমার নখে লেগে আছে তার স্মৃতি। 

শনিবার, ৭ মে, ২০১১

মিথ্যেবাদী জাদুকর

অগ্নিকুণ্ডের প্রজ্জ্বলিত শিখা নীল হয়ে জ্বলে উঠছে। ধুয়ায় ভেসে চলছে ছাই এর পালক। কিছু আধপোড়া অন্ধকার আলোর পাশে পাশে উড়ে।

অথচ একটা চুম্বন ঠোঁট থেকে দূরে
একটা লকলকে মিথ্যাও জড়িয়ে যাচ্ছে ভিষণ
দীর্ঘ শ্বেত বসন রূপান্তরে লাল
স্বপ্নও শতাব্দীকাল ধরে মৃত

সহসাই মিথ্যে করে দেয়া সত্যকে ফিরে পেতে প্রয়োজন সবুজ আয়োজন। মিথ্যেবাদী জাদুকরের তা হয়তো জানা আছে।